Baner Khabar


Brand
Category: Biography & Memory
SKU: MS46891340

250
  • Published by the publisher
  • 99% accurate spelling
  • Quality product

বনের খবর বাংলা সাহিত্যের ক্লাসিক। আজ থেকে প্রায় একশ’ বছর আগে প্রকাশিত, অথচ ভাষা ও বাক্ভঙ্গিতে, কাহিনী নির্মাণ কৌশলে আধুনিকতম। বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত রায় সাহিত্য-পরিবারের কৃতী প্রমদারঞ্জন রায় এর রচয়িতা। পেশায় ছিলেন ভারতের বৃটিশ যুগের অসমসাহসী এক কৃতী সার্ভেয়ার। ১৮৯৯ থেকে ১৯২০ সালে পূর্ববঙ্গ, আসাম, দেরাদুন, বেলুচিস্তান, বার্মার শান স্টেট ও কেং টুং রাজ্যের দুর্গম অঞ্চল ঘুরে ঘুরে জরিপের কঠিন কাজ করেন নিবিড় নিষ্ঠায়। সেই সূত্রে বাঘ, ভাল্লুক, হাতি, গণ্ডার, সাপ ও বুনো মোষের এমনকি নরখাদক নাত্ (ঘঁঃ) আদিবাসী মানুষের বিচিত্র অভিজ্ঞতা এঁকেছেন। বাঙালি জীবনে যা সচরাচর ঘটে না। শরীর-ঝলসানো গ্রীষ্ম কিংবা এমন শীত যে কম্বলে ঢাকা বালতির পানিও হয়ে যায় কঠিন বরফ। হিংস্র দস্যুদলের নিত্য প্রতিবেশী হয়ে জীবনে এমন অভিজ্ঞতাও বাংলা সাহিত্যে পাওয়া যায় না। এমন বিচিত্র বিষয়ে লেখা বই বাংলায় এই প্রথম এবং এখনও পর্যন্ত অপ্রতিদ্বন্দ্বী। বনের খবরের সে সব অঞ্চলে এখন সেই গভীর নিশ্চিদ্র অরণ্যও আর নেই। কিন্তু বনের খবর বইটি এখনও অনন্ত যৌবনা। ভাষায় এখনও আধুনিক, ঝরঝরে। কিশোর ও বড় সবার কাছে সমান জনপ্রিয় কাহিনী-রস ও বিন্যাসে। তেমনি ভয়ঙ্কর শিহরণ জাগানিয়া। জিম করবেট ও পচাব্দী গাজীর শিকার কাহিনীর বহু আগের হয়েও অভিনবত্বে এখনো চিরসজীব। ভূমিকা ‘বনের খবর’ বাংলা সাহিত্যে বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে রচিত এক অসামান্য স্মৃতিকথা। তাও বন-অরণ্যে ও মরুভূমি-প্রায় অঞ্চলে জরিপকালীন সময়ের। এ রকম লোমহর্ষক ও আনন্দ-বেদনা-দায়ক বই পড়ার সুখ কি ভোলা যায়! দেবাযুন, বেলুচিস্তান, পার্বত্য চট্টগ্রাম, বার্মা, আসামের বন ও নিবিড় অরণ্যের আলেখ্য ও তাদের জীবনাচরণ দিয়ে পাঠককে নেশাগ্রস্ত স্বপ্নবিলাসী করে তোলার বই। সেই সঙ্গে ১৯০৪-১৯০৫ সাল পর্যন্ত বেলুচিস্তানের অরণ্যহীন বালি-পাথুরে ভূমিপুত্রদের কঠোর জীবন ও শীতের দেখা পাই। প্রমদারঞ্জন রায়ের সার্ভেয়ার জীবনে দেখা এই ১৮৯৯ থেকে ১৯২০ সালের রূপকথার মতো গভীর অরণ্য বাংলা সাহিত্যের কোনো বইতে আমার পড়ার সুযোগ হয়নি। সেই অরণ্যও মানুষের হাতে ধ্বংস হয়ে গেছে মাত্র একশ বছরে। অরণ্য দেখার সুযোগ আমার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে হয়নি। যখন থেকে দেখা ও খোঁজা শুরু করেছি তখন পার্বত্য চট্টগ্রামের কোথাও তেমন অরণ্য আর নেই। বিখ্যাত সংরক্ষিত অরণ্য কাচলং, সাজেক, মাতামুহুরী ও সাঙ্গু উধাও। সিলেটে অরণ্য দেখিনি। সুন্দরবনেও যাওয়ার সুযোগ পাইনি তরুণ বয়সে। বনের খবর প্রকাশিত হয় ১৯২০ সালের পরে পুস্তকাকারে। তার আগে উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী সম্পাদিত ‘সন্দেশ’ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে কিছু লেখা ছাপা হয়েছিল। ১৯৬৪-৬৫ সালের দিকে ‘বনের খবর’ বইটি কিনে প্রায় এক নিশ্বাসে পড়ে ফেলি। তার আগে থেকেই আমি মাতাল পাঠক। বইয়ের শুরু থেকে এক দানবীয় আকর্ষণ আমাকে পেয়ে বসে। দেরাদুন থেকে বার্মার শান প্রদেশের অরণ্য ও পশুপাখি আরো নিবিড়। নিশ্চিদ্র গাছপালার রাজ্যে লেখক আমাদের প্রায় গ্রেফতার করে নিয়ে ছেড়ে দেন তাঁর পিছু পিছু। পথঘাট নেই। গাছপালা কেটে সেই অরণ্যে প্রবেশ করছেন দলবল নিয়ে সার্ভেয়ার প্রমদারঞ্জন রায় মহাশয়। সঙ্গে জন্তু-জানোয়ারের চলাফেরার রাস্তা আছে, সেই সঙ্গে তাদের ভয়াবহ উৎপাতের ও ধ্বংসের সাক্ষাৎ পাই। দলের-মজুর দু-একজন করে বাঘের পেটে চলে যাচ্ছে। হাতি-গণ্ডার আরও বিপজ্জনক বুঝিবা। কিন্তু সার্ভেয়ারদের বৃটিশ রাজত্বের চাকরি বজায় রাখতে হবে। সে তো আর আজকের দিনের সরকারী চাকরি নয়! আবার মানুষখেকো মানুষ আছে শান প্রদেশে। নাত্ (ঘধঃ) ধর্মে বিশ্বাসী তারা। নাত্দের পরিচয় পাই ২০০১ সালে জুনে ইয়াঙ্গুন শহর থেকে কেনা ‘হার্প অফ বার্মা’ বই পড়ার পর। জাপানি সাহিত্যিক মিচিও তাকেয়ামা রচিত। বইটি তরুণদের জন্য নামকরা কিশোর পত্রিকা ‘আকা তোমবো’ পত্রিকায় ধারাবাহিক ছাপা শুরু হয়। সঙ্গে সঙ্গে জনপ্রিয়তা পেয়ে যায় জাপানি বড়দের কাছেও। শেষে বইটি বিশ্ব ক্লাসিক রূপে স্থান করে নেয়। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে একদল জাপানি সৈন্য বার্মায় আত্মসমর্পণ করে। তাদের এক সৈন্য এই নাত্দের হাতে পড়ে জীবন্ত খাদ্য হতে হতে নাত্ সর্দারের কৃপায় বেঁচে যায়, ওই হার্প বাদ্যযন্ত্র বাজানোর গুণে। অথচ এই বইটি তোকিও ও ফুকুওয়াকা শহরে পেয়েও কিনিনি। জানতাম না বলে। সেই ‘বনের খবর’ বই চুরি হয়ে যাওয়ার বহু বছর পর কোলকাতা ন্যাশনাল লাইব্রেরীতে খুঁজেও পাইনি। ২০১১ সালে কোলকাতায় প্রকাশিত হওয়ার বিজ্ঞাপন দেখে পেয়ে যাই হারানো কৈশোরের মতো। কিন্তু প্রথম প্রকাশের সন-তারিখ নেই। তবে সেই একই বই, প্রচ্ছদ সত্যজিৎ রায়, অলঙ্করণ শ্যামলকৃষ্ণ বসু। অসাধারণ স্কেচ ও প্রচ্ছদ। সেই সময়কার গদ্য ও বানান রীতির উজ্জ্বল নক্ষত্রসম দিনপঞ্জি। রোমহর্ষক যেমন, তেমনি আনন্দদায়ক। জনমানবহীন কিন্তু বুনো জীবজন্তুতে ঠাসা বন, তেমনি ঘন গাছপালার জন্য আকাশ অদৃশ্য, গাছপালা-লতাপাতা কেটে পথ তৈরি করে চলা, বনজঙ্গলে তাঁবুতে রাত কাটানোর সময় বাঘের হানা, মত্ত হাতির মুখোমুখি হয়েও বেঁচে যাওয়া, গণ্ডার-ভালুক থেকে হনুমান ও বাঁদরের বাঁদরামি, পাখির কথা, নদী ও স্রোতস্বিনীর কলগুঞ্জন থেকে শীত ও গ্রীষ্মের দাবদাহ কি নেই ‘বনের খবর’ বইতে। আর বুনো বৃষ্টিতে নাকাল হওয়াও আছে। জোঁক-সাপতো তুচ্ছ। জিনিসপত্র বওয়ার জন্য হাতি, গরু, খচ্চর ও উট। এবং সঙ্গে আছে এক দঙ্গল কুলি। কখনো কখনো জিনিসপত্র ফেলে পালিয়ে যায় নাত্ দেবতার ভয়ে কিছু কিছু কুলি-মজুর। কুসংস্কারে তাদের ভীষণ ভয়। আবার খাদ্যাখাদ্যের বেলায় একেবারে বেপরোয়া সর্বভূক। তেমনি শুধু লঙ্কা ও নুন দিয়েও দিনের পর দিন পেট পুরে খেয়ে নিতে পারে। কাজ করে যায়। বার্মায় শান কুলিরা হাঁড়ি, কড়াই বা বাসন-কোসন ছাড়া ভাত রেঁধে খেত। লেখকের বর্ণনায় একটু শুনুন, “কী করে রান্না করে? একটা লম্বা কাঁচা বাঁশের চোঙার একটি বাদে সমস্ত গাঁটগুলিকে ফুটো করে, সেটাকে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়ে, তাতে আবশ্যক মতো চাল পুরে, জল ভরে, ঘাস-পাতা দিয়ে মুখটা বন্ধ করে একটা গাছে হেলান দিয়ে দাঁড় করিয়ে রেখে দেয়। তিন-চার ঘণ্টা অমনি থাকে, তারপর ওই চোঙাটা ধুনির আগুনে ঝলসায়। চারদিকে বেশ ঝলসানো হলে চোঙাটি জায়গায়-জায়গায় পুড়ে যায়Ñসেটাকে ধুনি থেকে বার করে রেখে দেয়। ঠাণ্ডা হলে পর দা দিয়ে আস্তে-আস্তে বাঁশটাকে চিরে ফেলে আর তার ভিতর থেকে দিব্যি একটা ভাতের পাশ বালিশ বার হয়ে আসে। সেটা চাকা-চাকা করে কেটে সকলে ভাগ করে নেয়, আর নুন, লঙ্কা, শুকনো মাছ বা মাংস উপকরণ দিয়ে খায়। গরমের দিনে কখনো বা ঝিঁঝি পোকা ধরে, আগুনে পুড়িয়ে তার চাটনি করে খায়। ঝিঁঝি পোকা নাকি অতি উপাদেয়!” ‘বনের খবর’ এত রোমাঞ্চকর যে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা গড়িয়ে যায়, তবু বই ছাড়া যায় না। আর্জন সর্দার বা জিম করবেট অথবা পচাব্দী গাজী এঁরা সবাই শিকারী। আটঘাট বেঁধে শিকারে নামেন। কিন্তু ‘বনের খবর’ জরিপ কাজের বই। তার পদে পদে বাঘের যত কাহিনী আছে তারা কেউ পথ ছাড়ার পাত্র নয়। বাঘও ছাড়বার পাত্র নয়। আবার বিপদ দেখলে সেও দে ছুট। সবাই জানেন বনে বাঘের রাজত্ব, বাঘও তা জানে। ভয় পেলে তো তার পেট চলবে না। কিন্তু একা নিরস্ত্র মানুষকেও কখনো-বা সে নিরাপদ নয় মনে করে হম্বিতম্বি হুমহাম গর্জনে ভয় দেখিয়ে নিজেই সটকে পড়ে। লেখক নিজে কতবার যে বাঘের পাল্লায় পড়েছেন! এবং প্রায় প্রত্যেক বার যেন অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন। তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন এসব কথা অকপটে। অথবা শুধু সাহসের জোরে বিনাযুদ্ধে জিতে গেছেন নিশ্চিত মৃত্যুর গ্রাস থেকে। শিকারি জিম করবেট, আর্জন সরদার বা পচাব্দী গাজী তো শিকারিই। আর ‘বনের খবর’ আমাদের বাড়ির কাছের পার্বত্য চট্টগ্রাম, বার্মা, আসামের বনজঙ্গলের লোমহর্ষক বর্ণিল কাহিনী। শিকারের বই না-হয়েও তার বাড়া রোমাঞ্চকর বই বলা যায়। বুনো হাতির মত্ততার একটু বর্ণনা তুলে ধরা যায় এই সূত্রেÑ “অনেক রাত্রে খচ্চরগুলোর ছুটোছুটিতে সকলের ঘুম ভেঙে গেছে। ব্যাপারখানা কী? এই ভেবে যেমন একজন খানাসি তাঁবুর দরজা ফাঁক করে গলা বের করেছে, আর অমনি দেখেÑওরে বাবারে, এয়া বড়ো দাঁতওয়ালা হাতি, তার পিছনে আরও হাতি। সে আস্তে আস্তে সকলকে সাবধান করে দিয়ে যেমন তাঁবুর পিছন দিয়ে বেরোতে যাবে অমনি হাতিও তাঁবুর উপর এসে পড়ল। তখন সকলে গড়িয়ে-গড়িয়ে খাদের ভিতর ঢুকে কোনো রকমে প্রাণ বাঁচাল, আর হাতিগুলো সেই রাস্তায় চলে গেল। তাঁবু-টাবু যা কিছু তাদের সামনে পড়েছিল, সব তারা শুঁড় দিয়ে ছুড়ে ছুড়ে খাদের মধ্যে ফেলে দিয়ে গেল। খচ্চরগুলোও রাস্তার উপর বাঁধা ছিল তারা সকলে দড়ি-টড়ি ছিঁড়ে পালাল, শুধু একটা খচ্চর মজবুত নতুন দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল, সে বেচারা পালাতে পারেনি। হাতিরা সেটাকে পা দিয়ে মাড়িয়ে একেবারে পিষে দিয়ে গেল।” এরকম অনেক ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী লেখক। অকপটে বর্ণাঢ্য অথচ সরল ভাষায় বলে গেছেন জীবন-কাহিনী। পড়তে পড়তে বন-জঙ্গল, বাঘ-হাতি, ভালুক-গণ্ডারহীন আমাদের দেশে বসে ভাবি, সত্যিই এসব কি ঘটেছিল? কক্সবাজার বা আসাম বা পাশের অরণ্যে? সেই অরণ্য এখন কোথাও নেই। শুধু আছে বইপত্রে, স্মৃতিতে, গল্প কাহিনীতেÑ‘বনের খবর’ বইতে। আজ থেকে ১১৩ বছর আগে এইসব ঘটেছিল প্রমদারঞ্জন রায় মহাশয় আমাদের জন্য লিখে রাখবেন বলে? এই বইয়ের প্রচার ও প্রসার না থাকলেও সত্তর-আশি বছরে মাত্র দু বার মুদ্রিত হলেও ‘বনের খবর’ বাংলা সাহিত্যে চিকচিহ্ন বই হিসাবে অমর হয়ে থাকবে। আর এবার প্রকাশিত হতে যাচ্ছে তৃতীয় মুদ্রণ। কোলকাতা থেকে ২০১১ সালে প্রকাশিত বইটি সংগ্রহ করে অ্যাডর্নের স্বত্বাধিকারী সৈয়দ জাকির হোসাইনকে দেখাতেই তিনি উৎসাহী হয়ে পড়েন। পাঠকেরাও এ বই পড়ে রসসিক্ত হবেন এই বিশ্বাস আমার দুর্মর বলতে দ্বিধা নেই। ‘বনের খবর’ আমার পড়া বিখ্যাত বইয়ের তালিকায় প্রথম সারিতে স্থান নিয়ে নক্ষত্র হয়ে থাকবে। কিশোর ও বড় সবার জন্য সমান উপভোগ্য ও সহজ পাঠ্য। বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত রায় পরিবারের সাহিত্যিক বংশে সবার মধ্যে আছে ভাষার এই আশ্চর্য সরলতা বা প্রসাদগুণ।

Vendor Banner
  • 2nd Floor, 22 Segun Bagicha/ dhaka/ dhaka/ bangladesh
  • N/A
  • N/A
  • N/A
  • 752
Visit Store

3.3

Average Rating

66.7%Recommended(2 of 3)
70%
30%
ok
40%
0%
0%

Submit Your Review

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 2 3 4 5
  • Commenter Avatar

    John Doe March 22, 2021 at 1:54 pm

    pellentesque habitant morbi tristique senectus et. In dictum non consectetur a erat. Nunc ultrices eros in cursus turpis massa tincidunt ante in nibh mauris cursus mattis. Cras ornare arcu dui vivamus arcu felis bibendum ut tristique.

  • Commenter Avatar

    John Doe March 22, 2021 at 1:52 pm

    Nullam a magna porttitor, dictum risus nec, faucibus sapien. Ultrices eros in cursus turpis massa tincidunt ante in nibh mauris cursus mattis. Cras ornare arcu dui vivamus arcu felis bibendum ut tristique.

  • Commenter Avatar

    John Doe March 22, 2021 at 1:21 pm

    In fermentum et sollicitudin ac orci phasellus. A condimentum vitae sapien pellentesque habitant morbi tristique senectus et. In dictum non consectetur a erat. Nunc scelerisque viverra mauris in aliquam sem fringilla.

  • Commenter Avatar

    John Doe March 22, 2021 at 1:54 pm

    pellentesque habitant morbi tristique senectus et. In dictum non consectetur a erat. Nunc ultrices eros in cursus turpis massa tincidunt ante in nibh mauris cursus mattis. Cras ornare arcu dui vivamus arcu felis bibendum ut tristique.

  • Commenter Avatar

    John Doe March 22, 2021 at 1:52 pm

    Nullam a magna porttitor, dictum risus nec, faucibus sapien. Ultrices eros in cursus turpis massa tincidunt ante in nibh mauris cursus mattis. Cras ornare arcu dui vivamus arcu felis bibendum ut tristique.

  • Commenter Avatar

    John Doe March 22, 2021 at 1:21 pm

    In fermentum et sollicitudin ac orci phasellus. A condimentum vitae sapien pellentesque habitant morbi tristique senectus et. In dictum non consectetur a erat. Nunc scelerisque viverra mauris in aliquam sem fringilla.

  • Commenter Avatar

    John Doe March 22, 2021 at 1:52 pm

    Nullam a magna porttitor, dictum risus nec, faucibus sapien. Ultrices eros in cursus turpis massa tincidunt ante in nibh mauris cursus mattis. Cras ornare arcu dui vivamus arcu felis bibendum ut tristique.

  • Commenter Avatar

    John Doe March 22, 2021 at 1:54 pm

    pellentesque habitant morbi tristique senectus et. In dictum non consectetur a erat. Nunc ultrices eros in cursus turpis massa tincidunt ante in nibh mauris cursus mattis. Cras ornare arcu dui vivamus arcu felis bibendum ut tristique.